ছড়া-৩

ঘাস ফড়িং এর জন্য আমার মনটা কেমন করে-
মাঝে মাঝে হঠাৎ আসিস ধূসর সফেদ ঘরে।
সিন্ধু আমি বিন্দু খুঁজি ধূ ধূ মরুর বুকে-
আমি কেবল কেঁদে মরি অস্থির অজানা শোকে।

ছড়া-২

আমি যদি হারিয়ে যাই- বিলিন হই তোর বুকে, 
লেগে আছে চুমুর স্বাদ-বিস্বাদ হয়ে অমলিন এই ঠোটে।

ছড়া-১

সুখের ঘরে হঠাৎ করে
আসলো সুখের পাখি
ঘুম জড়িয়ে আসছে আখি
ক্যামনে তোরে দেখবো পাখি।।
…………..
মনের মাঝে অকস্মাত
মন দিল যে ধাক্কা
আমি জানি কি বা না জানি
এ যে মনের ভুল পাক্কা।

সম্পর্ক-কানা

আমি সত্যি বড়ই ক্লান্ত। ঘর- বাহির সামলাইতে সামলাইতে। ভাল হওয়ার এক ব্যর্থ চেষ্টায় প্রতিদিন হয়ে যাচ্ছি খারাপ। কারো না কারো কাছে।
ভাল ছেলে, ভাল ছাত্র, ভাল মানুষ, ভাল বন্ধু, ভাল কর্মী, ভাল সন্তান, ভাল স্বামী হতে গিয়ে আমি আজ বড়ই ক্লান্ত।

খুব খারাপ হতে মন চায়। একদম পুরো দস্তুর এক খারাপ ছেলে। এত খারাপ যেন কেউ আমার কাছ থেকে ভাল কিছু আশা না করে।

বন্ধুরা অভিমান করে তাদের কেন খোঁজ নেই না। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন তাদের একই অনুযোগ, শুভাকাঙ্ক্ষী তো দিন দিন কমতির পথে। আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরাও পর্যন্ত এই অভিযোগ করতে থাকে।
কাজের সূত্রে প্রতিদিন ২/১ জনের সাথে পরিচয় ঘটে। তাদের আথিতেয়তা আর ভালবাসায় প্রতিদিন ঋণী হচ্ছি- দিনকে দিনকে।তাদেরও ঠিক মতো খোঁজ নেয়া হয়ে ওঠে না।

আমি আসলে পেরে উঠিনা। আমার হয়তো ধ্যাতে নেই।আমি বেশ সম্পর্ক কানা। আমি কোন সম্পর্ক ধরে রাখতে পারি না বা মেইনটেইন করতে পারি না।
কিংবা আমি মানুষের ভালবাসার মুল্য দিতে পারি না। কত মানুষ ভালবাসার ঋণে আবদ্ধ করে রেখেছে।কিন্তু তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হয়ে ওঠে না। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে তিন জন বন্ধুর মায়ের কথা- রাজু, জীবন আর সাগরের। তাদের তিন জনের সাথে আমার সম্পর্ক অল্প সময়ের। কিন্তু সেই অল্প সময়ের মধ্যেই এই তিনজন অনেক আপন করে নিয়েছেন। কিন্তু আমি এক হতভাগা পালিয়ে বেড়াই তাদের ভালবাসার বাঁধন থেকে। অসম্ভব এক চুম্বকীয় শক্তি আকর্ষণ করি তাদের প্রতি। আবার ছুটে চলে আসি দূরে। কেন- তার উত্তর নেই। তবে সত্যি বলছি- আমিও আপনাদের খুব ভালবাসি এবং মিস করি। কিন্তু আপনাদের ভালবাসায় বিলীন হয়ে জাওয়ার ভয়ে হয়তো পালিয়ে বেড়াই নিজের থেকে আরো যোজন-যোজন দূরে।

অনেকটা কাঁকতলিয় ভাবে পরিচিত হয়েছিলাম একজন অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তার সাথে। তিনিও আমাকে বেশ ভালবাসলেন। আমি তাকে আমার এই ‘সম্পর্ক-কানা’ র কথা খোলাখুলি বললাম। তিনি আমাকে ভুল বুঝলেন। সকল ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলেন। আমি হয়তো তাকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছিলাম।

আমার সাথে খুব ভাল যোগাযোগ নেই আমার কর্মজীবনের শেষ তিন জন সুপারভাইজারের সাথে। হয়তো আমার দিক থেকে কোন ত্রুটি ছিল।তবে এতটুকু বলতে পারি- যখন একসাথে কাজ করতাম তখন কারোর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটেনি।

আমি এক চরম ‘সম্পর্ক-কানা’।
-ঝড়ের পাখি
৩-১৩-১৬

স্রোতের বিপরীতে

মাঝে মাঝে ভাবি স্রোতের বিপরীতে হেঁটে কি লাভ? কিংবা হাঁটা আদোও উচিত কি? সবাই যখন ছুটছে স্রোতের অনুকুলে। বৃথায় সময় এবং শ্রম ক্ষয় করছি।
কিংবা যে পাত্রে ভালবাসা কিংবা কোন কিছু দেবো সেই পাত্রেরও তো ধারণ ক্ষমতা থাকতে হবে। না হলে সে গুলো উপচে পড়ে যাবে। ধরা যাক, প্রতিদিন আমরা কাপের আধ কাপ চা খেতে খেতে অভ্যস্থ; হটাত করে যদি পুরো কাপ ভরে দেয়া হয়- তাহলে সত্যি বিচ্ছিরি বিদিখিচ্ছিরি লাগে।
তাই ভাবছি- সিধান্ত নিয়েছি- কৃপণ হয়ে যাবো। স্রোতের অনুকূলে হাঁটবো। নিজের সবটুকু দেবো না। পারলেও না; থাকলেও না।
তখন দেখো কেমন লাগে? কেমন লাগে? ………

ছোট বেলায় যা শিখেছি জীবন থেকে যা শিখছি

জীবনে বড় হওয়ার সময় কিছু বিষয়ে মগজ ধোলাই হয়েছিল- যেগুলো জীবনের সাথে ওতপ্রোত ভাবে মিশে আছে। কিন্তু বড় হতে হতে জীবন দিয়ে বুঝতে শিখেছি সেই ধোলাই কৃত জিনিস এই জীবনে বেশ অচল। তার বিপরীতে নতুন করে শিখছি–
ছোট বেলায় যা শিখেছি জীবন থেকে যা শিখছি
…………………………… ………………………………
সদা সত্য কথা বলিয়ো ঃ সবখানে সত্য কথা বলতে নেই
অন্যায়ের কাছে মাথা নত করো না ঃ সবখানে মাথা তুলতে নেই
মানুষ মাত্রই ভুল করে ঃ কর্তা দের কোন ভুল হয় না
বক্স এর বাইরে ভাবতে শেখো ঃ বক্স এর ভিতরেই থাকো
ভুল প্রশ্ন হলেও প্রশ্ন করো ঃ সবার কাছে প্রশ্ন করতে নেই
যুক্তি দিয়ে ভাবতে শেখো ঃ ভেবো না- করে যাও
জ্ঞান অন্বেষণ করো ঃ সব কিছু জানতে চেয়ো না

গল্প

গল্প লিখতে বলো আমায়…
কি গল্প লিখি বলো?
গাল গল্প না আষাঢ়ে গল্প।
গুজব মিশলে হয়ে যায় গল্প-গুজব।
গল্পে নাকি গরু গাছে ওঠে।

তবুও কি বলবে – গল্প লিখতে?
গল্পের ধরনে এবং বৈচিত্রে নিজেই মাঝে মাঝে গল্প হয়ে যাই।
ছোট গল্প, বড় গল্প- মাঝারি গল্প হয় কি না জানি না।
প্রেমের গল্প, ভালবাসার গল্প কক্ষনো আবার জীবনের গল্প।
সুখের গল্প, দুখের গল্প, কষ্টের গল্প, আনন্দের গল্প।
তোমার গল্প, আমার গল্প, আমাদের গল্প-
গল্প লিখতে গিয়ে কবিতা লিখে ফেললাম না তো?