মার্ক্স, শ্রেনী এবং শ্রেনী সংগ্রাম

শ্রমিক, পুঁজিপতি এবং ভূমি মালিকদের আয়ের
প্রধান উৎস যথাক্রমে মজুরি, লাভ এবং জমির মূল্য। অন্যভাবে বললে, আধুনিক সমাজের পুঁজিবাদী
উৎপাদন ব্যবস্থায় তিনটি বড় ধরনের শ্রেনী দেখা যায়। যথা- ক) মজুরি শ্রমিক, খ)
পুঁজিপতি, এবং গ) ভুমি মালিক।
ইংল্যান্ডের আধুনিক সমাজ অনেক বেশি উচ্চ এবং
স্বভাবতই অর্থনৈতিক ভাবে উন্নত। সেখানে শ্রেনীর সঠিক চিত্রটি দেখা যায় না। সেখানে
মধ্যবিত্ত একটি শ্রেনী দেখা যায়। যা গ্রামীন এলাকার তুলনায় শহরে বেশি দেখা মেলে।
আমরা দেখি যে, পুঁজিবাদী অর্থনীতি ব্যবস্থার ধারাবাহিক প্রবণতা এবং অন্যতম শর্ত
হচ্ছে- উৎপাদনের উপকরণ গুলো থেকে শ্রমিকদের বিচ্ছিন্ন করা। পাশাপাশি উপকরণ গুলোকে বৃহৎ
গ্রুপের (
Large Group) মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। যার মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেনী স্বনির্ভর শ্রমিক থেকে মজুরি
নির্ভর শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে এবং উপকরণ গুলো রূপান্তরিত হচ্ছে পুঁজিতে।
যাইহোক, শ্রেনী সম্পর্কিত মার্ক্সের প্রথম
প্রশ্ন হচ্ছে-
Ø  শ্রেণী তৈরির উপাদান কি?
এই প্রশ্নের উত্তরে স্বাভাবিকভাবে আরও একটি প্রশ্নের জন্ম দেয়।
Ø  কি উপাদান শ্রমিক, পুঁজিপতি এবং ভূমি মালিক এড় মট ৩টি বড় সামাজিক শ্রেণী
তৈরি করে?
প্রথমতই দেখতে হবে, শ্রেণী সমূহের আয়ের উৎস (REVENUE)  এবং আয়ের ধরন সম্পর্কে। সমাজে ৩টি
বড় সামাজিক গোষ্ঠী দেখা যায়। যার সদস্যের পৃথক করা সম্ভব হয় যথাক্রমে তাদের
জীবনধারণের উপযোগী মজুরি (
Wages), মুনাফা (Profit) এবং গোষ্ঠীবদ্ধ ইন্টারেস্ট
(Group Interest)
এর উপর ভিত্তি করে। এই জীবিকা তারা সংগ্রহ
করে তাদের শ্রম ক্ষমতা, পুঁজি এবং ভূসম্পত্তি থেকে।
যাইহোক, এই দৃষ্টি কোন থেকে স্বভাবতই একটি
প্রশ্নের সৃষ্টি। তাহলে ডাক্তার এবং 
চাকুরিজিবীরা কোন শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত। এদের আয়ের উৎস সম্পর্কে অবগত হলে
এদের শ্রেণী সম্পর্কে ধারনা লাভ করা সম্ভব। এরাও দুইটি সামাজিক শ্রেনীতে বিভক্ত।
প্রত্যেক গ্রুপের সদস্যদের আয়ের উৎস একই। কেননা তারা পুঁজিপতি কিংবা ভুমি মালিকের
কাছ থেকে তাদের আয় পেয়ে থাকে।

কাব্যলক্ষ্মী

তুমি যক্ষের ধন,

হৃদয়ের হাসি।

তোমাকেই প্রিয়া আমি

বড় ভালবাসি।

তুমি গানের কথায় এসেছিলে প্রিয়,

        প্রানের কথায় এলে না।

তুমি দর্শণ সুখ হয়ে এলে তবু,

        প্রিয়তমা হয়ে এলে না।

তুমি বাঁশরীয়ার সুর হয়ে এলে,

        বাঁশি হয়ে তুমি এলে না।

তুমি মধুর কন্ঠের গান হয়ে এলে,

       শিল্পী হয়ে এলে না।

তুমি চাঁদের জোছনা, তারার আলো,

      চাঁদ কেন তুমি হলে না ?

তুমি ফুলের গন্ধ হলে,

      ফুল কেন তুমি হলে না ?

কৃষকের মাঠের ফসল  হলে তুমি;

      কৃষাণীর হাসি হলে না।

 নব বধূর সলাজ হাসি হলে

     বধূ কেন তুমি হলে না ?

কবিতার মাঝে ছিলে গো তুমি,

      কবির মাঝে ছিলে না।

জীবনে আমার সুখ হয়ে এলে;

     সুখী হয়ে কেন এলে না ?

কাল বোশাখীর ধ্বংস হলে,

    ঝড় হয়ে তুমি এলে না?

তুমি বৃষ্টি ঝরার ছন্দ হলে ;

    বরষা কেন হলে না ?

হাতের মাঝে এসেছিলে তুমি,

      ছোঁয়ার মাঝে  এলে না।

ভালবাসা হয়ে এলে গো তুমি-

      প্রেম হয়ে কেন এলে না ?

লেখনীর মাঝে এলে তবু, তুমি

       লেখার মাঝে এলে না।

দেখার মাঝে এলে গো তুমি,

       দেখা হয়ে কেন এলে না ?

হৃদয়ের মাঝে ছিলে তবু, তুমি

       আমার মাঝে ছিলে না।

ভুলের মাঝে এসেছিলে তবু তুমি

       ভুল হয়ে কেন এলে না ?

তুমি আশার মাঝে এসেছিলে তবু,

        আশা হয়ে কেন এলে না ?

তুমি স্বপনের মাঝে রাণী হয়ে এলে;

       জীবনের রাণী হলে না।

নিঃশ্বাসের মাঝে মিশে ছিলে তুমি,

      নিঃশ্বাস কেন হলে না ?

তুমি জীবনের স্পন্দন হলে

      জীবন কেন হলে না ?

আপনার মাঝে এসেছিলে তবু,

      আপন হয়ে এলে না,

কান্না হয়ে এলে কেন তুমি?

      হাসি হয়ে কেন এলে না?

তুমি নয়নের মাঝে ধরা দিলে এসে,

      হৃদয়ের মাঝে এলে না।


তুমি কাব্যলক্ষ্মী হয়ে এলে শুধু……

লক্ষ্মী হয়ে এলে না।

ঝড়ের পাখি (০৫-০৯-০২)

দখলদারিত্ব


আমার চোখের দিকে তাকাও!

তোমার চোখের সাগরে ডুব দেব,

সমুদ্রের তলদেশে অবস্থিত হৃদয়ের

দরজায় কড়া নাড়বো।

চোখটা নামিয়ে নিও না।

আমাকে কাদিও না।

তোমার হৃদয়টা কি ঘুমিয়েছিল?

দরজা খুলতে এত দেরি করছো কেন?

দ রজার কপাট খুলে দাও;

জানালা গুলোও খুলতে দাও।

দখিনা বাতাস প্রবেশ করুক হৃদয়ে

হু-হু করে।

লিলুয়া বাতাসের শীতল শিহরনে-

তোমাকে করুক রোমাঞ্চিত।

নিঃ শাসের সাথে প্রবেশ করবো তোমার ফুসফুসে,

হৃৎ পিন্ডে; রক্ত কনিকার সাথে মিশে যাবো,

শিরা-উপশিরা হয়ে মিশে যাবো প্রতিটি কোষে।

হৃৎপিন্ডের প্রতিটি ক্ম্পনে-কম্পিত হবো আমি।

এক সময় তোমার সব কিছু দখল করে নেবো;

তখন  আর তুমি আমাকে তোমার থেকে

বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।

তুমি মানে আমি, আমি মানে তুমি।

আমাকে অবহেলা করলে, অবহেলিত হবে তুমিই;

আমাকে আঘাত করলে আহত হবে তুমি।

কেঁদনা- কেননা তোমার অশ্রুতেও

মিশে আছি আমি।

আমাকে যখন ঝরাবে –তোমার কপোল

বেয়ে তোমার ওষ্ঠে পড়বো;-

চুমোয় চুমোয় তোমাকে

উষ্ণ করে তুলবো।

এবার বলো —

আমাকে ভালবাসবে না?

ঝড়ের পাখি

প্রিয়জন

– কেমন আছো ?

– আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না !

– আপনি নয় তুমি……

– তোমাকে তো আমি চিনি না !

– আমি তো চিনি।

– কীভাবে চিনলে ?

– কেন, দুটি চোখ আর মন দিয়ে,

  নয়নের আলোতে, হৃদয়ের অভব্যক্তিতে,

  হিয়ার ছোঁয়ায়, কল্পনার শক্তিতে।

– কেন চিনলে ?

– প্রয়োজনে, মানবিকতার টানে-

  ভালবাসার মায়ায় আর দর্শনের পরিতৃপ্তিতে।

  কিংবা তোমাকে চিনবো বলেই হয়তো

  আমার এ আগমন।

– আমাকে কক্ষনও দেখেছো ?

– এইতো দেখলাম।

– এর আগে কক্ষনও-

– ছোট্ট জীবনে এই বিশাল পৃথিবীর

  কত কিছুই তো দেখি;

  হয়তো বা দেখে থাকবো; হয়তো বা না।

– আমি কি তোমার পরিচিত কেউ ?

– এই তো পরিচিত হলাম,

  কেউ তো কারও পরিচিত থাকে না,

  পরিচিত হয়।

  পৃথিবীতে সবার আগমন-

  পরিচয়হীন, অপরিচিত হয়ে।

– অদ্ভুত তো………!

– অদ্ভুত আমি, অদ্ভুত তুমিও…

  কোন কিছুই ভূত নয় !

  স্রষ্টার সমস্ত সৃষ্টি ই অদ্ভুত।

  আর এ জন্য পৃথিবীতে বসবাসটা

  এতটা মধুময়, বোর নয়।

– হা… হা… হা… (মুচকি হাসি) তারপর……

– আলাপন, আমন্ত্রণ, নিমন্ত্রন,

  প্রিয়জন।

ঝড়ের পাখি

২৮-০২-০৫