ছোট বেলায় পরিবার আর আত্মীয় স্বজন শিখিয়েছিল- রাস্তায় পথে-ঘাঁটে, স্কুল-কলেজে কোথাও কোন ঝামেলা হলে দ্রুত সুবিধাজনক অবস্থানে সরে যেতে। সম্ভব হলে তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে আসতে।
কি সুন্দর শিক্ষা! বেড়ে ওঠা!
আমার সন্তান যেন থাকে নিরাপদে।
তুমি যদি কোন মারামারি বা ঝামেলায় থাকো- কক্ষনো আওয়াজ তুলবা না। চুপচাপ থাকবা। স্বাক্ষী হওয়া যাবে না। পুলিশ কেস হলে অনেক ঝামেলা। কোর্ট- কাচারিতে হাজিরা দিতে দিতে নিজের জীবন শেষ হয়ে যাবে।
সবসময় বন্ধুদের অনুসরণ করবা, একা একা কোথাও যাবা না। সবাই যেখানে যাবে সেখানে যাবে- সেটা যদি ভুলও হয়। ছোট একটা উদাহরণ দেই- শহরে রাস্তা পারাপারের সময় আমরা ট্রাফিক সিগনালের অপেক্ষা করি না। ভিড়ের অপেক্ষা করি। ৩-৪ জন একসাথে হলেই রাস্তায় নেমে যাই। সম্মিলিত ভাবে ট্র্যাফিক আইন ভাঙি। একসাথে হলে অনেক অপরাধ- স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এমনকি মৃত্যুও।
আমরা আসলে সম্মিলিতভাবে অপরাধে বিশ্বাসী। আমরা ঘুষ দেই দলগত ভাবে, সহমত হই দলগত ভাবে, খু/নও করি দলগত ভাবে।
গণ অভভুথ্যানের সময় রিকশাওয়ালা, মেসের খালা, ফুটপাতের দোকানদার, টোকাই যেমন সমান অংশীদার-
এই মৃত্যু গুলোতে- যারা ছবি তুলেছে, আশে-পাশে বসে দূর থেকে চোখের এক কোন দিয়ে দেখেছে- সেও সমান খু/নি।
আমি বিশ্বাস করি না শুধু ১/২/৩ জন খু/নি- আর আশেপাশের মানুষ গুলো (আমিও দাঁড়িয়ে ছিলাম শকল খুনের ভিড়ের মধ্যে) কি ধোঁয়া তুলসী পাতা? এক একজন খু/নি।
আপনি ভাবছেন- আপনি ঘরে বসে বসে আছেন আর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে- ত্যালতেলীয়ে জান্নাতে যাবেন? খুঁজে দেখেন আপনার সন্তান, ভাই, বোন, আত্মীয় এমনকি আপনি আমি খু/ন করে এসে মাংস দিয়ে ভাত খাচ্ছি আরাম করে।
জানেন আমরা এখনো বসে আছি এই বিশ্বাসে- যে আমি তো ভালো, আমার স্বামী, সন্তান, আত্মীয়-বন্ধু তারা তো নিষ্পাপ- খু/ন/চুরি/ডাকাতি/অপহরণ/ ধ/র্ষ/ণ/ মূর্তি ভাঙ্গার সাথে জড়িত না।
আমার-আপনার বাড়ির চারপাশের নোংরা আবর্জনা যেমন আমার আর আপনার। আপনার-আমার চারপাশের সকল অবক্ষয় আর অপরাধের ভাগিধার সমানভাবে আপনি এবং আমিও।
এই সমাজ আর এই দেশ যদি রসাতলে যায়- তবে আপনি কিন্তু আপনার ছাঁদেও নিরাপদে থাকবেন না।
এখনি সময় নেমে পরা, প্রতিরোধ আর প্রতিবাদের সকল অন্যায়ের। শুধু যদি ১ জন ২১ জন কিংবা ৩০০ জনের দিকে চেয়ে বসে থাকি- তাহলে যুগযুগ ধরে শুধু শোষিত আর নির্যাতিত হবোই।
মনে রাখবেন-
আমাদের সরকার/রাষ্ট্রও আমাদেরই প্রতিচ্ছবি!